জায়গা ভাড়া করে আবাসন ব্যবসার নামে প্রতারণা

জায়গা নেই, জমি নেই- মেগা বিল্ডার্স সিটির প্লট বিক্রির প্রতারণা থেকে কেউ রেহাই পাচ্ছে না। সরকারি চাকরিজীবী, প্রবাসী, ব্যবসায়ী, খেটেখাওয়া মানুষজন থেকে শুরু করে সবার পকেট থেকেই টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে চক্রটি।
কোনো অভিযোগেই প্রতাপশালী চক্রটির কিছুই হয় না। স্থানীয় প্রশাসন থেকে ভূমি মন্ত্রণালয় পর্যন্ত সর্বত্রই মেগা বিল্ডার্স সিটির বিরুদ্ধে শত শত প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। রয়েছে জবরদখল আর সন্ত্রাসের মাধ্যমে এলাকাবাসীর জায়গা-জমি দখল করে সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে দেওয়া।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মেগা বিল্ডার্সের আবাসন প্রকল্প মেগা টাউন পূর্বাচলে কোন জমি না কিনে কোনও ধরনের অনুমোদন না নিয়েই ২০২৪ সালে প্রকল্প বিক্রয় শুরু করে।
গত এক বছরে প্রায় ৩৫-৪০ কোটি টাকা বিক্রি করে এবং তাদের জমি রেজিস্ট্রি বুঝিয়ে না দিয়ে শুরু করছে বিভিন্ন তালবাহনা। সকল টাকা মেগা বিল্ডার্সের এম ডি মুরাদ ইকবাল চৌধুরী দেশের বাহিরে পাচার করেন।
তাদের ৫ টি আবাসন প্রকল্পের মধ্যে সবগুলো অবৈধ এবং সব গুলো প্রকল্প হাত ছাড়া হয়ে গিয়েছে।
অগণিত ক্রেতা থেকে তারা টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করে দেশের বাহিরে পাচার করেছে।
সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত এক ব্যবসায়ী জানান, ইতিমধ্যেই মেগা বিল্ডার্সের আবাসন প্রকল্প মেগা টাউন ভুঁইফোড় রিয়েল এস্টেট কোম্পানিটির সাইনবোর্ড দেখিয়ে সহস্রাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে কয়েকশ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন সিটির কর্মকর্তারা। সেসব মানুষকে নিছক একটি চুক্তিপত্র ছাড়া আজ পর্যন্ত আর কিছুই দেখাতে পারেননি তারা। আর এই চক্রের মূল হোতা সেলস এর হেড রেজা আল মুরাদ রন।
এদিকে স্থানীয়রা বলেন মেগা বিল্ডার্সের সিটিসহ বহু আবাসন প্রকল্প সাইনবোর্ড সর্বস্ব। তারা জমির আইলে সাইনবোর্ড দাঁড় করিয়েই ক্রেতাদের কাছে প্লট বিক্রি করে থাকে। এতে করে অনেকেই প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি।
বিষয়টি স্থানীয় জেলা প্রশাসন ও ভূমি মন্ত্রণালয়কেও তিনি অবহিত করেছেন বলে দাবি করেন। এর আগে রাজউক রাজধানীর সম্প্রসারিত এলাকায় ভুয়া রিয়েল এস্টেট কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান শুরুর ঘোষণা দিতেই রূপগঞ্জে অন্যান্য প্রতারক প্রতিষ্ঠানের মতো মেগা বিল্ডার্সের আবাসন প্রকল্প মেগা টাউন সিটির সাইনবোর্ড নামিয়ে সাইট অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয়। ওই সময় রূপগঞ্জের পূর্বাচল উপশহরকে ঘিরে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে ওঠা বাহারি নামের শতাধিক আবাসন কোম্পানির হাজার হাজার সাইনবোর্ড এক রাতেই গায়েব হয়ে যায়।
বেশ কিছুদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকার পর রাজউকের তৎপরতা স্তিমিত হতেই মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে মেগা বিল্ডার্সের আবাসন প্রকল্প মেগা টাউন। এলাকাবাসীর কাছে ভুয়া কোম্পানি হিসেবে পরিচিত প্রতিষ্ঠানটি এ পর্যন্ত স্থানীয় জমি মালিকদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দিয়ে শায়েস্তা করেছে। এলাকার দালালদের রুখতে এলাকাবাসী ফুঁসে উঠতে শুরু করেছেন।মেগা বিল্ডার্সের আবাসন প্রকল্প মেগা টাউন সিটির বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগের শেষ নেই।
গৃহায়ণ ও গণপূর্তসচিব মো. হামিদুর রহমান বলেন, রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে যারা জাগৃক ও রাজউক থেকে প্রকল্প অনুমোদন করেনি, তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আইন অনুযায়ী তাদের (আবাসন প্রতিষ্ঠান) অবশ্যই পৃথক প্রকল্পের জন্য অনুমোদন নিতে হবে।
জাগৃক সূত্রে জানা যায়, গত ৩১ ডিসেম্বর নির্বাহী প্রকৌশলী (ঢাকা ডিভিশন-১) মো. কায়সার ইবনে সাঈখ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন। সেখানে তিনি রূপগঞ্জ এলাকার মেগা বিল্ডার্স, ভাইয়া হাউজিং লিমিটেড, প্রাইম অ্যাসেট লিমিটেড, সাভারের সুগন্ধা প্রোপার্টি ডেভেলপমেন্ট লি. চলন্তিকা হাউজিং এবং স্বপ্নভূমি আবাসন বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা উল্লেখ করেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: