সারার কর্নিয়ায় আলো পেয়ে ভালো আছেন সুজন ও ফেরদৌস আখতার

সারার কর্নিয়ায় আলো পেয়ে ভালো আছেন সুজন ও ফেরদৌস আখতার

ব্রেন ডেথ রোগী সারা ইসলামের দান করা কর্নিয়া পাওয়া দুই রোগী ভালো আছেন। তারা সারা ইসলামের কর্নিয়ায় চোখের আলো ফিরে পেয়েছেন। এরই মধ্যে তারা সুস্থ হয়ে ওঠায় হাসপাতাল থেকে শিগগির তাদের রিলিজ দেওয়া হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ এ তথ্য জানিয়েছেন।

রোববার (২৯ জানুয়ারি) সকালে সারা ইসলামের কর্নিয়া পাওয়া রোগীদের চোখ পরীক্ষা করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। ওই দুই রোগী হলেন- শিক্ষিকা ফেরদৌস আখতার (৫৬) ও মোহাম্মদ সুজনের (২৩)।

এ বিষয়ে বিএসএমএমইউ উপাচার্য জানান, গত ১৮ জানুয়ারি দিনগত রাতে সারা ইসলামের দুটি কিডনি অন্য দুজন রোগীর দেহে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। একই সঙ্গে তার দুটি কর্নিয়া দুইজনের চোখে বসানো হয়েছে। সারার অঙ্গদানের মাধ্যমে চারজন মানুষ নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন। এটি দেশের চিকিৎসা সেবায় মাইলফলক।

বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০১৬ সালে এক অজানা ভাইরাসে ফেরদৌস আখতারের ডান চোখে সমস্যা দেখা দেয়। এরপর থেকে তিনি কিছুই দেখতে পেতেন না। স্থানীয় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চোখ দেখালেও সমাধান মেলেনি। পরে সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শীষ রহমানের কাছে চিকিৎসা নিতে আসেন। সাত বছর আগে কর্নিয়া প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন এ চিকিৎসক। তবে কর্নিয়া সংকটে এটি এতদিন করা সম্ভব হয়নি।

জানা গেছে, কর্নিয়া জোগাড় করতে আগ্রিম ৫০ হাজার টাকা দিয়ে রেখেছিলেন এ শিক্ষিকা। সারাহর কর্নিয়া দানের সম্মতি পেয়েই চিকিৎসক শীষ রহমান ফেরদৌসকে ফোন করে ঢাকায় আসতে বলেন। এরপর তার ডান চোখে কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা হয়। ডান চোখে এখন স্বাভাবিকভাবে দেখতে পাচ্ছেন তিনি।

এদিকে, মোহাম্মদ সুজনের চোখের অস্ত্রোপচারে নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষুবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজশ্রী দাশ। মোহাম্মদ সুজন এখন ভাল আছেন।

দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন ২০ বছর বয়সী সারা ইসলাম। মৃত্যুর আগে তিনি তার অঙ্গদানে সম্মতি দেন। গত ১৯ জানুয়ারি প্রথম প্রহরে সারা ইসলাম ব্রেন ডেথ হয়। এর পরপরই বিএসএমএমইউ ক্যাডাভেরিক সেলের আহ্বায়ক ও রেনাল ট্রান্সপ্লান্টেশনের অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলালের নেতৃত্বে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার দুই কিডনি বের করে আনা হয়।

এরপর একটি কিডনি শামীমা আক্তার নামের এক রোগীর দেহে সফলভার প্রতিস্থাপন করেন অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল। সারা ইসলামের অপর কিডনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. খুরশিদুল আলমের নেতৃত্বে হাসিনা আক্তার নামের অপর এক রোগীর শরীরে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। তারা এখন ভালো আছেন।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top