জবির সাবেক প্রক্টর

র‌্যাগিং ও মাদক নির্মূল করেছিলেন মোস্তফা কামাল

সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে র‌্যাগিং, মাদক মুক্ত, শিক্ষার্থী সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগ নিষ্পত্তি ও সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করেছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল। ছিলেন উদার, মানবিক, পরোপকারী, সহজ-সরল, অমায়িক, সৎ সাহসী ও শিক্ষার্থীবান্ধব। 

কিন্তু সদ্য ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কুমিল্লা শহরে নিজেদের বাড়িতে আত্মহত্যা করা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ এনে সাবেক প্রক্টর মোস্তফা কামালকে একটি মহল বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এই ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাবেক বর্তমান শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। নিম্মে তুলে ধরা হলো।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী নূর মোহাম্মদ লিখেন, মাদকমুক্ত ও সুশৃঙ্খল ক্যাম্পাস রাখতে আপনার মত একজন উদার, মানবিক, পরোপকারী, সহজ-সরল, অমায়িক, সৎ সাহসী ও শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষক পাওয়া দুষ্কর।আপনাকে আমি ছাত্রদের প্রয়োজনে কখনই বিরক্তি হতে দেখিনি।শিক্ষার্থী যেন কোনো ধরনের কষ্টের সম্মুখীন না হন সে লক্ষ্যেই কর্মতৎপরতা অব্যাহত রেখেছিলেন।জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে যেন আপনার আরেক পরিবার বানিয়েছিলেন।কোনো ছাত্র আপনাকে তার প্রয়োজনে পায় নি এমনটি আমি হতে দেখিনি। আমাদের প্রয়োজনে আপনাকে পাইনি এমনটিও হতে দেখিনি।
আপনার ধ্যান জ্ঞান ছিলো শিক্ষার্থীদের কল্যাণ করা। করোনাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের মেসভাড়া সমস্যার সমাধান, ছাত্রদের ব্যক্তিগত সমস্যা ও চিকিৎসার জন্য যে কোনো সময় এমনকি রাত ২ টায় আপনি ছাত্রদের সমস্যা সমাধানের জন্য অস্থির থাকতে দেখিছি। আপনার শিক্ষার্থীদের প্রতি ভালোবাসা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য পরিশ্রম কোন কমতি দেখিনি।ছাত্রদের প্রয়োজনে দিন রাত এক করে ফেলতে দেখেছি।আমাদের প্রয়োজন পূরণ করতে আপনি সাধ্যমত সব ধরনের চেষ্টা করেছেন! আপনার যে সময়টা আমাদের জন্য উৎসর্গ করেছেন তা অনেকটা বিরল।
করোনাকালীন সময়ে ঢাকায় আটকা পরা শিক্ষার্থীদের বাড়িতে পাঠাতে আপনার নিরলস চেষ্টা সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভুলবেনা! গাড়িতে উঠিয়ে বিদায় দিয়ে নিয়মিত কল দিয়ে শিক্ষার্থীদের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন।এ যেন পিতার সাথে সন্তানের এক মধুর সম্পর্ক। আপনি আপন হয়ে ওঠার এক আপন আদর্শজন, শিক্ষক জগতের উজ্জ্বল আলোকিত বাতিঘর। যারা আপনার সমালোচনাকারী তাদের জন্যও সহমর্মিতার হস্ত প্রসারিত দেখেছি। আপনার স্নেহ ছায়ায় যেনো পথ চলা হয় আমাদের। আমাদেরকে স্নেহ ও ভালোবাসা দেয়ার জন্য শত কৃতজ্ঞতায় কৃতার্থ আপনার কাছে।আমরা আপনার সম্মান, স্বীকৃতি, সফলতা কামনা করি পরম শ্রদ্ধেয় ড.মোস্তফা কামাল স্যার!

রাসেল নামে এক শিক্ষার্থী লিখেন, এক সময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ঘিরে মাদক ব্যবসার নিরাপদ সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছিল। অনেক শিক্ষার্থী এই মাদক সেবন ও বেচাকেনায় জড়িত ছিলেন। মাদকের ভয়াবহ পরিস্থিতি শিক্ষকসহ বিভিন্ন নীতিনির্ধারক মহল ও অভিভাবকদের রীতিমত ভাবিয়ে তুলেছিল। সে পরিস্থিতি নির্মূল করে একটি নিরাপদ ক্যম্পাস গড়ে তুলেছিলেন মোস্তফা কামাল স্যার।

রেহানা আক্তার নামে একজন লিখেছেন, আমরা যারা তার পরিবারের লোকজন,তারা দেখেছি কিভাবে পরিবারকে উৎসর্গ করে বিশ্ববিদ্যালয়, ছাত্র ছাত্রীদেরকে সময় দিয়েছে,প্রয়োজনে কাছে থেকেছে,ভালবেসেছে।

ইয়াসিন মিয়া (Yasin Mia) কৃতজ্ঞতা জানিয়ে লিখেন ·
সাবেক প্রক্টর মোস্তফা কামাল স্যার যে কতটা অমায়িক ও শিক্ষার্থীদের প্রতি স্নেহাস্পদ সেটি আমি অন্তত উপলব্ধি করি স্যারের সাথে আমার হয়ে যাওয়া ঘটনাটি নিয়ে। স্যারের পূর্ণ ন্যায়সঙ্গত অধিকার ছিল আমার প্রতি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের।কিন্তু তিনি ক্লাসে হাসি দিয়ে যেভাবে আমাকে প্রথমে সম্বোধন করে সেটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখেছেন তা তার মহানুভবতাকেই পরিস্ফুট করে। বিশ্ববিদ্যালয় হতে বেরিয়ে যাওয়ার কয়েক বছর পরও ঘটনাচক্রে বাংলাবাজার মোড়ে স্যারের সাথে দেখা হয়। সেখানে বুকে জড়িয়ে স্যারের অফিসে নিয়ে অনেকটা সময় সামষ্টিক কুশলাদি জিজ্ঞেস করলেন। ব্যস্ততার কারনে আমিই তখন বিদায় নিয়ে চলে আসি। স্যারের সামগ্রিক কল্যাণ, সুস্থতা ও সফলতা কামনা করছি

মোহাম্মদ নুর উদ্দিন (Muhammad Nur Uddin) লিখেন,
যারা ক্যাম্পাসে উচ্ছৃঙ্খল ও বেপরোয়া ছিলো মূলত এরাই স্যারের নামে বদনাম করছে। এদের উদ্দেশ্য ভালো না।

সানাউল্লাহ ( Sanaullah Sajid) লিখেন, প্রায় সময়ই সপ্তাহে সাতদিনই দেখতাম স্যার ক্যাম্পাসে, লাইব্রেরীতে কোন প্রয়োজন হলে, শিক্ষার্থীরা প্রথমেই দৌড়ে আসতো স্যারের কাছে।
তবে স্যারের অপরাধ হলো,স্যার মাদক সেবনে বাধা দিতেন,কেউ বিশৃঙ্খলা করতে চাইলে কঠোর হস্তে দমন করতেন।

তানভীর আহম্মেদ তামিম (Tanvir Ahmad Tamim) লিখেন, একজন নিরহংকারী, অহিংসুক ও পরোপকারী শিক্ষক। কখনোই ছাত্রদের নেগেটিভ বিষয় নিয়ে পড়ে থাকতে দেখিনি। বিপরীত আদর্শের ছাত্রদেরও কখনো ভিন্ন বিবেচনায় জাজ করতে স্যারকে দেখিনি। ক্লাসে গিয়ে অহেতুক গাল গল্প বলতে শুনিনি কখনো। ক্লাসে নিজের অর্জনের গল্প দিয়ে আত্মপ্রচার করতেও কখনো দেখিনি। যতক্ষণ ক্লাস নিতেন কোর্স রিলেটেড কথাই বলতেন। একজন সরল চিত্তের সাবলীল মানুষ। একজন আদর্শ শিক্ষক। হাজার সালাম থাকবে স্যারের প্রতি❤️????

মোহাম্ম আল  (Md AL Amin)  লিখেন, স্যার যতদিন ছিলেন ক্যাম্পাসের পরিবেশ অনেক ভালো ছিল।ভিন্ন মতের রাজনীতি যারা করে তারাও স্যারকে ভালোবাসে।স্যার ক্যাম্পাসের পরিবেশ নোংরা হতে দেননি।মাদক কে না বলে দিয়েছিলেন!

মুসা ( Musa Alam Khan) নামে এক শিক্ষার্থী লিখেন,তার প্রতিটি সিদ্ধান্ত ছিলো ছাত্রদের কল্যাণ, ক্যাম্পাসে যারা তার কারনে মাদকের আখড়া হিসাবে গড়ে তুলতে পারেনাই এরাই স্যারের বিরুদ্ধাচরণ করছে।

(Jamal Ahmed He is the best and most successful proctor of Jagannath University in my eyes)

জামাল আহমেদ লিখেন, তিনি আমার চোখে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা এবং সবচেয়ে সফল প্রক্টর। 




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top