ছিনতাইয়ের ঘটনায় ঢাবি ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার

ঢাবির কবি জসীম উদ্দিন হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তুষার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক এক নারী শিক্ষার্থীর স্বামীসহ তাকে শ্লীলতাহানি ও মারধরের ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে এ ঘটনায় অভিযুক্ত ঢাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের তানজীর আরাফাত তুষারকে গ্রেফতার করে শাহাবাগ থানা পুলিশ। অভিযুক্ত তুষার ঢাবির কবি জসীম উদ্দিন হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারী। রোববার (১৫ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তরের পাশে এ ঘটনা ঘটে।

শাহাবাগ থানা ও মামলার এজহার সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাত সাড়ে দশটার দিকে মোটরসাইকেলে করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঘুরছিলেন ভুক্তভোগী ঢাবির সাবেক নারী শিক্ষার্থী ও তার স্বামী। শিখা চিরন্তনের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় রাহুল রায়, তুষারসহ কয়েকজন তাদের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে তাদের অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করে। এসময় রাহুল রায় ওই নারীকে শ্লীলতাহানি করে এবং তার স্বামীকে মারধর করে গলায় থাকা এক লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। স্বামীকে মারধর করার সময় ওই নারী বাধা দিতে গেলে পাশে থাকা ডিউটিরত আনসারদের প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে তাকে আঘাত করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করেন। পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে শাহবাগ থানা পুলিশ।

পরে মঙ্গলবার এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী শাহবাগ থানায় জগন্নাথ হলের আইন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রাহুল রায় এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের তানজীর আরাফাত তুষার এবং অজ্ঞাত ৫-৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় তুষারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে শাহাবাগ থানা পুলিশ।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী কালবেলাকে জানান, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২-১৩ সেশনের সাবেক শিক্ষার্থী। তারা মদ্যপ অবস্থায় ছিলো। প্রথমে রাহুল আমাদের গাড়ি থামিয়ে অকথ্য ভাষায় কথা বলে। তারপর অন্যপাশ থেকে ওরা সবাই এসে আমাদের উপরে হামলা করে। আমার স্বামীকে আমি যখন বাচানোর চেষ্টা করেছি যখন রাহুল চেয়ার দিয়ে আমার পিঠে আঘাত করতে থাকে। পরে আমি দৌড় দিয়ে শাহাবাগ থানায় গিয়ে পুলিশের সহযোগিতা নেই। কিন্তু ওই সময় পুলিশ তাদের আটক করেনি। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টর স্যার তাৎক্ষনিক আমাকে সহযোগিতা করেছেন। অপরাধীরা যে দলেরেই হোক, অপরাধী আইনের উর্ধ্বে নয়। যারা যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের দ্রুত গ্রেফতার করবে এটাই আমার প্রত্যাশা।

ঢাবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী কালবেলাকে বলেন, ওই শিক্ষার্থীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি শাহাবাগ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সহযোগিতা সেটা আমরা করছি এবং ভবিষ্যতেও অপরাধী চিহ্ণিত করণে সকল ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।

ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত কালবেলাকে বলেন, আইন আইনের গতিতে চলবে। আইনকে আমরা সম্মান করি। যদি কেউ অপরাধ করে থাকে তাহলে তাকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। অপরাধ না করলে তাকে শাস্তি দেওয়া যাবে না।

শাহাবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ  বলেন, এ ঘটনায় আমরা একজনকে গ্রেফতার করে কোর্টে চালান করেছি। আসামির নাম তুষার।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top