শৃঙ্খলা ফেরানোর চেষ্টায় ছাত্রলীগ

শৃঙ্খলা ফেরানোর চেষ্টায়  ছাত্রলীগ

দেশের আন্দোলন-সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা ছাত্রলীগ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে ভাবমূর্তি হারাতে বসেছে। বিশেষ করে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর নানা নেতিবাচক খবরের শিরোনাম হয়েছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এ অবস্থায় ভাবমূর্তি ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছে সংগঠনটির নতুন নেতৃত্ব। তারা বলেছেন, সংগঠনে শৃঙ্খলা ফেরাতে তারা যে কোনো কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে প্রস্তুত আছেন।

গত এক মাসে এক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসেই নানা অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে সংঘর্ষে জড়ানোর পাশাপাশি চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের মতো অভিযোগও রয়েছে। এসব ঘটনায় শাস্তির মুখেও পড়েছেন কিছু নেতাকর্মী।

গত কয়েক মাসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা নানা কর্মকাণ্ডে সমালোচনার মুখে পড়েন। এর মধ্যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষক নির্যাতনের অভিযোগও রয়েছে।

এসব অভিযোগে গত শনিবার ২২ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এদের মধ্যে ১৬ জন ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয়ের। বাকি ছয়জন অন্যান্য বিশ্বিবদ্যালয়ের।

বহিষ্কতরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক মানবসম্পদবিষয়ক উপসম্পাদক নাজমুল হাসান রুপু, কবি জসিমউদদীন হলেল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানজীর আরাফাত তুষার, ফজলুল হক মুসলিম হল শাখা ছাত্রলীগের সমাজসেবা সম্পাদক আসাদুল্লাহ আসাদ, পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমান বাঁধন, গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ পলক, উপ-দপ্তর সম্পাদক জিহাদুল ইসলাম, অর্থবিষয়ক উপসম্পাদক আল কাওসার, গ্রন্থনা ও প্রকাশনাবিষয়ক উপসম্পাদক শাওন চৌধুরী, কর্মী মো. তারেক, মাস্টার দা সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ফাহিম তাজওয়ার জয় ও সাজিদ আহমেদ, বিজয় একাত্তর হলের ছাত্রলীগ কর্মী ফজলে নাবিদ সাকিল, মো. রাহাত রহমান ও সাদিক আহাম্মদ।

এ ছাড়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক অসিত পাল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মারুফ ইসলাম, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহসম্পাদক শাহ আলম রাতুল, কর্মী নূর মোহাম্মদ নাবিল ও কামরান সিদ্দিক রাশেদ এবং সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ শাখার কর্মী রাকিবুল ইসলামকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এদিকে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসন সৈকত স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে অমর একুশে হলের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হাসান সোহাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান  বলেন, ‘বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ তদন্ত করে ২২ জনের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আরও কিছু অভিযোগ নিয়ে কাজ চলছে। সে বিষয়েও সিদ্ধান্ত আসবে। কোনো অপরাধীকে প্রশ্রয় দেবে না ছাত্রলীগ।’

তিনি আরও বলেন, ‘সংগঠনের যারাই অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হবে, তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সারাদেশে বিশুদ্ধ শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে ছাত্রলীগ পরিচালিত হয়। এখানে দূষিত, কলুষিত এবং দেশের জন্য ক্ষতিকারক কারও জায়গা হবে না।’

সভাপতি সাদ্দাম হোসেন  বলেন, ‘সংগঠনের পদপদবি, নাম-পরিচয় ব্যববহার করে কেউ অনৈতিক ও শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে ক্ষমতার রাজনীতি করার সুযোগ কাউকে দেওয়া হবে না- এটি আমাদের স্পষ্ট বার্তা। আমরা যে কোনো মূল্যে ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার পরিবেশ ঠিক রাখব।’




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top