সাত গুণের প্রতিচ্ছবি সদ্য বিদায়ী ডিসি মমিনুর রহমান

সাত গুণের প্রতিচ্ছবি সদ্য বিদায়ী ডিসি মমিনুর রহমান

অনেস্ট, হার্ড ওয়ার্কিং, ট্রান্সপারেন্ট, পোলাইট, ইফিসিয়েন্ট, ইন্টেলিজেন্ট ও কারেইজাস এই সাত গুণের প্রতিচ্ছবি যেন সদ্য বিদায়ী ঢাকা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। মোহাম্মদ মমিনুর রহমান পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার হয়েছেন। এরই মধ্যে বুধবার (২৬ জুলাই) তার নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেছেন। ঢাকা জেলার বর্তমান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান ১৮৫তম জেলা প্রশাসক হিসেবে ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর ঢাকা জেলায় যোগদান করেন। ইতোপূর্বে তিনি বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে জেলা প্রশাসক হিসেবে অত্যন্ত সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন।
মোহাম্মদ মমিনুর রহমান জেলা প্রশাসক হিসেবে ঢাকায় যোগদান করে ঢাকা জেলার জটিল ও বৃহৎ রাজস্ব প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার ও উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। ঢাকা জেলার সকল স্তরের সেবা প্রত্যাশিদের চাহিদা পূরণে কার্যকর ভূমিকা পালন করেছেন। ঢাকা মহানগরে ঘটে যাওয়া সিদ্দিকবাজার বিস্ফোরণ, বঙ্গবাজার অগ্নিকান্ড ও নিউমার্কেট অগ্নিকান্ডে সময়োপযোগী ভূমিকা পালন করে সার্বিক ব্যবস্থাপনাসহ ক্ষতিগ্রস্থদের বিপুল আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করেন। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ অধীনস্থ অন্যান্য অফিস আধুনিকায়ণ, জেলা প্রশাসনের শূন্য পদে নিয়োগ প্রদান, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন, তথ্য প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো উন্নয়ন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।

মোহাম্মদ মমিনুর রহমান ঢাকা জেলায় যোগদানের পরপরই অন্যান্য সকল বিষয়ের মত ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থাপনা খাতেও তার উদ্যমী ভূমিকা রেখেছেন। সরকারী সম্পত্তির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, অবৈধ দখলে থাকা খাস জমি এবং অর্পিত সম্পত্তি উদ্ধার এবং সাধারণ মানুষের কল্যাণে উদ্ধারকৃত এ সকল সম্পত্তির ব্যবহার নিশ্চিতকরণে তিনি অত্যন্ত কঠোর ও আপোষহীন ভূমিকা পালন করেছেন। ঢাকা মহানগরীসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে ভূমিদস্যু এবং অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেন এবং সফলতার সাথে একের পর এক মূল্যবান সরকারী জমি অবৈধ দখলমুক্ত করেন।

সরকারি খাস জমি, অর্পিত সম্পত্তি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধিকারভুক্ত সম্পত্তি, নদী/খাল/বিল/রাস্তা ঘাট, সরকারি কৃষিজমি, অধিগ্রহণকৃত সরকারি জায়গা অবৈধ দখল থেকে উদ্ধার করে জনসাধারণের কল্যাণে ব্যবহার করা এবং একইসাথে সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য ঢাকা জেলার বর্তমান জেলা প্রশাসক সরকারী সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা ও এর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের উপর সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করে অভিযান পরিচালনা করেছেন।

গত ৮ মাসে ঢাকা জেলায় ৫৭.৫৯ একর খাসজমি উদ্ধার করা হয়েছে যার বাজারমূল্য প্রায় ২,০০০ কোটি টাকা। ঢাকা শহরের মিরপুর, পুরানা পল্টন, নবাবপুর রোড, তোপখানা রোড, ডুমনীসহ বিভিন্ন এলাকায় সরকারের মূল্যবান সম্পত্তি হতে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হয়েছে।

গত ৮ মাসে প্রায় ৪.৫২ একর অবৈধ দখলে থাকা স্থাপনাসহ অর্পিত সম্পত্তি দখল মুক্ত করেন যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা। উদ্ধারকৃত এ সকল সম্পত্তি জনকল্যাণে ব্যবহার নিশ্চিতকরণের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন মোহাম্মদ মমিনুর রহমান।

বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে জেলা প্রশাসক হিসেবে মমিনুর রহমান

বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে জেলা প্রশাসক হিসেবে অত্যন্ত সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন ডিসি মমিনুর রহমান। তিনি চট্টগ্রামের দিনমজুর, কৃষক-শ্রমিক, মুক্তিযোদ্ধাসহ সকলের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছেন। দুর্নীতিবাজ রাঘব বোয়ালদের গ্রেপ্তার করেছেন।

হাজার কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি দখলমুক্ত হয়েছে তার হাতে। এ ছাড়াও কভিড-১৯ সংক্রমণ রোধকল্পে গৃহীত যুগোপযোগী পদক্ষেপ, সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে হতাহত পরিবারগুলোকে আর্থিক ও মানসিকভাবে সাপোর্ট প্রদান, সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও মেধার ভিত্তিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ২১৭ জন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ এবং চট্টগ্রাম জেলায় বাস্তবায়নযোগ্য ১০টি চলমান প্রকল্প, যেমন : মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ও জাদুঘর, সমন্বিত সরকারি অফিস কমপ্লেক্স, হাটহাজারী পৌরসভা বাইপাস সড়ক, বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর, মীরসরাই হতে বে টার্মিনাল, চট্টগ্রাম পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে, শাহ আমানত বিমানবন্দর এবং বে টার্মিনালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য নির্মাণ, গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত পর্যটন স্পট, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের অনুকূলে চট্টগ্রাম জেলায় শুটিং স্পট নির্মাণ, আশ্রয়ণ প্রকল্পসমূহে স্বপ্নযাত্রা প্রাথমিক বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম কালেক্টরেট স্কুল, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন স্মৃতি জাদুঘরসহ আরো বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি সর্বমহলে প্রশংসিত এবং সুনাম কুড়িয়েছেন।
ডিসি মমিনুর রহমান চট্টগ্রাম জেলার পাহাড়খেকো, ভূমিদস্যুদের কাছ থেকে সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকার মূল্যবান খাসজমি উদ্ধার করেছেন। বর্তমানে সীতাকুণ্ড উপজেলার জঙ্গল সলিমপুরের প্রায় আট হাজার কোটি টাকা মূল্যের ৩১০০ একর সরকারি খাসজমি উদ্ধার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

চট্টগ্রামের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করে এখানে নাইট-সাফারি পার্কসহ মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের কাজ চলছে। যুগ যুগ ধরে দখলে থাকা এসব সম্পত্তি উদ্ধার করার কারণেই তার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রও করেছে প্রভাবশালীরা।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার পর থেকেই দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন মমিনুর রহমান। ছদ্মবেশে তিনি বিভিন্ন উপজেলা, সার্কেল ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসে আকস্মিক পরিদর্শন করেন।
দ্রুত অভিযান চালিয়ে ভূমি অফিসের দালালদের বিরুদ্ধে জেলহাজতসহ বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন তিনি। এসব অফিসের ১৮৩ জন উমেদারকে বের করে দেওয়ার পাশাপাশি দুর্নীতির দায়ে কয়েকজন ভূমি সহকারী, উপসহকারী কর্মকর্তা ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর বিরুদ্ধেও বিভাগীয় মামলা দিয়েছেন। এ ছাড়া সরকারি অফিসগুলোতে দালালদের দৌরাত্ম্য রোধ, সার্বিক স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ অধীন সব কার্যালয়ে সহস্রাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
শুধু তা-ই নয়, চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা পরীর পাহাড় থেকে দুই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছেন তিনি। ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের পাদদেশ থেকে ৫৮৭টি অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করেছেন।

তাঁর উদ্যোগে ২০২০ সালের ৮ ডিসেম্বর উত্তর কাট্টলী মৌজার প্রায় ৩০ একর জায়গা নিয়ে গড়ে ওঠা অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ করে দখলমুক্ত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এ স্থানটিকে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ও জাদুঘর নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে। ইতিমধ্যে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ও জাদুঘরের নকশা চূড়ান্ত হয়ে ডিপিপি প্রস্তুতের কাজ চলমান রয়েছে।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রাম থেকে যুক্ত থাকা যাত্রা মোহন সেনের মহামূল্যবান বাড়িটি উদ্ধার ও সংরক্ষণেও ভূমিকা রয়েছে ডিসি মমিনুরের। ভূমিদস্যুরা বাড়িটি ভেঙে দখল করার অপচেষ্টা চালালে জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তি ও সুধীসমাজের হস্তক্ষেপে ঐতিহাসিক এই বাড়ি দখলমুক্ত করেন। বর্তমানে বাড়িটি সংরক্ষণ করে বিপ্লবী জাদুঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলছে।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উপজেলা, জেলা ও বিভাগ পর্যায়ে সরকারি অফিসের জন্য পরিকল্পিত ও সমন্বিত অফিস ভবন নির্মাণের তাগিদ দিলে শুরুতেই তৎপর হয়ে ওঠেন ডিসি মমিনুর রহমান। চট্টগ্রাম জেলার চান্দগাঁও (বন্দর) মৌজায় ৭৩.৪২ একর খাসজমিতে চট্টগ্রামের বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে সরকারি অফিসের জন্য বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এবং সুপরিকল্পিত সমন্বিত সরকারি অফিস কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন তিনি।

কর্ণফুলী নদীর পাড়ে মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে একই স্থানে সরকারি অফিস আধুনিক নগরায়ণের প্রকৃষ্ট উদাহরণ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। পর্যটনের বিকাশেও ভূমিকা রয়েছে তার। দেশজুড়ে পরিচিতি পাওয়া সীতাকুণ্ডের গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকতে যোগাযোগব্যবস্থা আধুনিকীকরণ, সেখানে ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ এবং বিচটিকে সংরক্ষিত পর্যটন জোন হিসেবে গেজেটভুক্ত করার উদ্যোগ নেন তিনি।

চট্টগ্রামে জেলা প্রশাসনের নিজস্ব পরিচালনায় ও সরাসরি তত্ত্বাবধানে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এবং ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য সুষ্ঠু যুগোপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের সরাসরি পরিচালনায় একটি আধুনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কথা মাথায় আসে তার। এরই ফলে কালেক্টরেট স্কুলের শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে এবং আগামী বছর থেকে শিক্ষার্থী ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হবে। পূর্ব নাছিরাবাদ মৌজায় অবস্থিত একটি এপিএমবি বোর্ড কর্তৃক বরাদ্দকৃত ভবনে স্কুলের কার্যক্রম শুরু হবে।

এক যুগ ধরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কোনো নতুন নিয়োগ না হওয়ায় কার্যালয়ের সার্বিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছিল। তার উদ্যোগে ২১৭ জন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও মেধার ভিত্তিতে। এমনকি চাকরির পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে আসা ১৩ জন অপরাধীকেও জেল-জরিমানা করা হয়। বর্তমানে আরো ৪৭ জন নতুন কর্মচারী নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। শুধু তা-ই নয়, নবনিযুক্ত কর্মচারীদের মাসব্যাপী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন তিনি। সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ও সর্বস্তরের সেবাগ্রহীতার সঙ্গে সদ্ব্যবহারের দৃষ্টান্তও রয়েছে তার। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার জন্য গাড়ি ক্রয় এবং নতুন প্রাণী সংগ্রহের জন্য দুই থেকে পাঁচ কোটি টাকার দরপত্র আহ্বান করেন।

কভিড-১৯ সংক্রমণ রোধ, ভেজালবিরোধী অভিযান ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে মহানগর ও জেলার বিভিন্ন উপজেলা পর্যায়ে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে তিনজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছেন। ৩০০ জন ভলান্টিয়ারকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রশিক্ষিত করে তোলা হয়েছে। তারা করোনাকালীন দুর্যোগে জেলা প্রশাসন কর্তৃক সহায়তা কার্যক্রমে নিরলসভাবে কাজ করেছেন এবং বর্তমানেও সমাজের বিভিন্ন ক্রান্তিকালে জেলা প্রশাসনকে সহায়তা করছেন।

মানবিক কর্মকাণ্ডেও এগিয়ে রয়েছেন তিনি। চলতি বছরের ৪ জুন রাতে সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে হতাহত পরিবারগুলোর পাশে ছিলেন জেলা প্রশাসক। এ দুর্ঘটনায় নিহত ৫১ জন, ৯৯ জন গুরুতর আহতসহ প্রত্যেক হতাহতের পরিবারকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে আর্থিক সহায়তা করে জেলা প্রশাসন। এ ছাড়াও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে জেলা প্রশাসনের সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন করা হয় যেখান থেকে সার্বক্ষণিক হতাহতদের খাদ্য, পানীয় এবং যাবতীয় ওষুধ দিয়ে সহায়তা করা হয়। পাহাড়ধসের সময় নিরাপদ আশ্রয়ে স্থানান্তর ও সার্বিক ব্যবস্থপনার জন্যও জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছেন।

এ ছাড়াও জমকালো আয়োজনে অভিভাবকহীন তিন কন্যারও (মর্জিনা, মুক্তা ও তানিয়া) বিয়ে দেন জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান। প্রধানমন্ত্রীর ফার্স্ট প্রায়রিটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের অংশ হিসেবে চট্টগ্রামে ইতিমধ্যে ভূমিহীন এবং গৃহহীনদের জন্য বরাদ্দকৃত ৫০৪৩টি গৃহ থেকে ৩৪৯৬টি গৃহ নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে, যার মধ্য থেকে ডিসি মমিনুর রহমানের দক্ষ ম্যানেজমেন্টে ইতিমধ্যে অধিকাংশ ঘরই হস্তান্তর করা হয়েছে।

মমিনুর রহমানের নির্দেশেই জেলা প্রশাসনের ৫০ জন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের অধীনে ৫০ জনসহ মোট ৮০০ জনের ‘এনভায়রনমেন্টাল কনজারভেশন অ্যান্ড ডিজাস্টার রেসপন্স টিম’ গঠন করা হয়েছে। এ টিমের সদস্যদের বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য প্রশিক্ষিত করা হয়েছে।

চট্টগ্রামের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য স্বল্পমূল্যে বিআরটিসি বাসের ব্যবস্থা করেছেন। চট্টগ্রামে হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল চালুকরণে সহায়তা করেছেন তিনি।

এ ছাড়া নতুন বালুমহাল ঘোষণা করে অবৈধ বালু ও মাটি কাটা বন্ধ করা, হালদা নদীর জীববৈচিত্র্য রক্ষার্থে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ, ডলু আশ্রয়ণ প্রকল্পে স্কুল, মসজিদ, মন্দির, কমিউনিটি সেন্টার এবং পুকুর নির্মাণ, পতেঙ্গা সি বিচ, আনোয়ারা সি বিচ, গুলিয়াখালী সি বিচকে বিচ ম্যানেজমন্ট কমিটির মাধ্যমে তত্ত্বাবধান করা, নতুন শিল্পকলা একাডেমি ও শিশু একাডেমি ভবন নির্মাণের উদ্যোগ, হিজড়া ও বেদে সম্প্রদায়ের বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন।

 

 




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top