শুভ জন্মদিন বিশ্বনেতা শেখ হাসিনা
আজ ২৮ সেপ্টেম্বর। বঙ্গবন্ধুর বীরকন্যা জননেত্রী দেশরত্ম শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন। শুভ জন্মদিন বিশ্বনেতা মানবতার মা শেখ হাসিনা। এই দিনটিকে বাংলাদেশের পুনর্জন্মের দিন বললেও নিশ্চয়ই বেশি বলা হবে না। কারণ, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে যেমন ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম হতো না, তেমনি তাঁর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার জন্ম না হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রগতিশীল অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ পুনরুদ্ধারও ছিল সম্পূর্ণ অসম্ভব। বাংলাদেশ সেই যে ১৯৭৫ সালে পথ হারিয়েছিল, সেই দেশ আর তার আপন পথ খুঁজে পেতো না। অন্যভাবে বললে-৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশে একক নেতা, যিনি সত্যিকার অর্থেই বাঙালির অতি আপনজন। যিনি দেশকে নিয়ে ভাবেন, জনগণের কল্যাণে সর্বদা নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন, দেশের মানুষই তাঁর একমাত্র আপনজন। তার সংগ্রামমুখর জীবন বাংলাদেশেরও উত্থান পতনের ধারাবাহিতার ইতিহাস। সহজ সারল্যে ভরা তার ব্যক্তিগত জীবন। পোশাকে-আশাকে, জীবন-যাত্রায় কোথাও কোন প্রকার বিলাসিতা বা কৃত্রিমতার ছাপ নেই। এ যেন পিতার মতোই বাংলার মাঠঘাট থেকে উঠে আসা বাংলার মেয়ে। মেধা, যোগ্যতা, সততা, সাহস দিয়ে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
কবি হাসান হাফিজুর রহমান জননেত্রী শেখ হাসিনাকে বলেছিলেন, ‘আপনিই তো বাংলাদেশ।’ আসলেই তিনিই (শেখ হাসিনা) বাংলাদেশ। কারণ তাঁর কারণেই বাংলাদেশের অর্জন এখন সারা দুনিয়ার নজরকাড়া। নজর কেড়েছেন তিনিও। তিনি বিশ্বনেতার তালিকাভুক্ত। জাতিসংর্ঘের অধিবেশন, ভারতে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলন ও অতি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন পর্যবেক্ষণ করলেই সে চিত্র দেখতে পাই। বিশ্বনেতারা যেভাবে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে সন্মান দেখান, তাতে জননেত্রী শেখ হাসিনার একজন কর্মী হিসেবে এবং বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে গর্ববোধ করি।
সবার মধ্যমণি ছিলেন বদলে দেওয়া বাংলাদেশের রুপকার জননেত্রী শেখ হাসিনা। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার পর যার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে হাটছি। জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতে দেশের নেতৃত্ব থাকলে ২০৪১ সালের আগেই বাংলাদেশ হবে একটি অন্যতম অর্থনীতির দেশ।
জননেত্রী শেখ হাসিনা আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার। তিনি আঁধারভেদী আলোকশিখা। বঞ্চিত-নিপীড়িত মানুষের আশ্রয়দাতা। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের কোটি কোটি বিপন্ন মানুষের মর্মবাণী আজ উচ্চারিত হচ্ছে তার কণ্ঠে। স্বজন হারানোর চিরবেদনায় কাতর হয়েও তিনি মানুষের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তার অদম্য পথ চলাই তাকে গন্তব্যের শীর্ষবিন্দুতে পৌঁছে দিয়েছে। আমি দীর্ঘদিন দেশরত্ম শেখ হাসিনার পাশে থেকে উপলব্ধি করেছি দেশ ও দেশের মানুষের উন্নয়ন ভাবনাই তার জীবনের ব্রত।
হেনরি কিসিঞ্জারের ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’র অপবাদ ঘুচিয়ে বাংলাদেশ আজ ১১ লক্ষাধিক রোহিঙ্গার আশ্রয়দাতা। শুধু তাই নয়, তাদের অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসারও জোগানদাতা এই বাংলাদেশ। তাই বঙ্গবন্ধুকন্যা ‘মাদার অব হিউমিনিটি’। সরকারি অর্থায়নে পাকাঘরসহ বাড়ি দিচ্ছেন ভূমিহীনদের। যা বিশ্বের নতুন নজির। তবে উন্নয়নের এই মহাসড়কের যাত্রাটা সব সময় কুসুমাস্তীর্ণ ছিলো না। এসেছে অনেক বাধা, অনেক বিপত্তি। এসব বাধ-বিপত্তিকে আপনি গুড়িয়ে দিয়েছেন, গুড়িয়ে দিচ্ছেন অদম্য সাহসিকতায়। পাশ্চাত্যের ষড়যন্ত্রের অংশ ছিলো বাংলাদেশকে জঙ্গিরাষ্ট্র হিসাবে পরিচিত করার। আপনি সেই ষড়যন্ত্রের মুখে কুঠারাঘাত করেছেন। জঙ্গির বংশকে করেছেন সমূলে নির্মূল।
বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের কারণেই করোনা মহামারির মধ্যেও দেশের অর্থনীতির চাকা সচল থাকায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এশিয়ার প্রায় সব দেশের ওপরে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নেতৃত্ব, সময়োচিত পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে মহামারি করোনা এবং ইউক্রোন-রাশিয়ার যুদ্ধের সময় মানুষের জন্য আর্থিক ও খাদ্য সহায়তা, অর্থনীতিকে বাঁচাতে প্রণোদনা ঘোষণা এবং বাস্তবায়নের কারণে দেশে অনাহারে একজন মানুষেরও মৃত্যু হয়নি, খাদ্যের জন্য কখনো কোথাও হাহাকার হয়নি।
জাতির পিতার বীরকন্যা ক্ষমতায় এসেছিলেন বলেই বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি, একাত্তরের ঘাতক যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্য সম্পন্ন করা, সংবিধান সংশোধনের মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, ভারত ও মিয়ানমারের সাথে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি এবং সমুদ্রে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ব্লু ইকোনমির নতুন দিগন্ত উন্মোচন, ভারতের সঙ্গে সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন ও ছিটমহল বিনিময়, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট সফল উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে মহাকাশ জয়, সাবমেরিন যুগে বাংলাদেশের প্রবেশ, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ, মেট্রোরেল, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন, কর্ণফুলী টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, নতুন নতুন উড়াল সেতু, মহাসড়কগুলো ফোর লেনে উন্নীত করা, এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত, দারিদ্র্যের হার হ্রাস, মানুষের গড় আয়ু প্রায় ৭৪ বছর ৪ মাসে উন্নীত, দলিলসহ লক্ষ লক্ষ ভূমিহীন-গৃগহীনদের আপন ঠিকানার ব্যবস্থা করা, নিজস্ব অর্থায়নে সারাদেশে ৫৬৪ টি দৃষ্টি নন্দন মডেল মসজিদ নির্র্মাণ, যুগোপযোগী শিক্ষানীতি প্রণয়ন, সাক্ষরতার হার ৭৫.৬০ শতাংশে উন্নীত করা, বছরের প্রথম দিনে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে নতুন বই পৌঁছে দেওয়া, মাদ্রাসা শিক্ষাকে মূলধারার শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত করা ও স্বীকৃতি দান, মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় স্থাপন, প্রত্যেকটি জেলায় একটি করে সরকারি/বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ, নারী নীতি প্রণয়ন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ, ফাইভ-জি মোবাইল প্রযুক্তির ব্যবহার চালুসহ অসংখ্য ক্ষেত্রে কালোত্তীর্ণ সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এখানেই শেষ নয়, আমি যে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছি (পানিসম্পদ মন্ত্রণায়) সেখানেও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অভাবনীয় কাজ হয়েছে। নদী মাতৃক বাংলাদেশে আগে বর্ষায় হাজার হাজার মানুষ নদী ভাঙ্গনে তাদের ভিটে মাটি হারাতেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কাজ করে নদী ভাঙ্গন এক তৃতীয়াংশে নামিয়ে এনেছেন।
আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর দায়িত্বে থাকা শেখ হাসিনা ৪২ বছর ধরে নিজ রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও আপসহীন নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশের রাজনীতির মূল স্রোতধারার প্রধান নেতা হিসেবে তিনি নিজেকে শুধু উপমহাদেশেই নয়, বিশ্ব নেতৃবৃন্দের নজর কাড়েন। তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য রাজনৈতিক জোট-দলগুলো ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারবিরোধী গণআন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে চূড়ান্ত বিজয়ী হয়। ১৯৯৬ সালের ১২ জুন আন্দোলন-সংগ্রাম করে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেই বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেন। আইনি বাধা অপসারণের জন্য সংবিধান বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে, সেই কালো আইন ও কলঙ্কময় অধ্যায় ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ রহিতকরণ বিল’ সপ্তম সংসদে উত্থাপন করেন। ওই বছর ১২ নভেম্বর আইনটি সংসদে পাস হয় এবং ১৪ নভেম্বর মহামান্য রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর এটি পরিপূর্ণভাবে আইনে পরিণত হয়। ফলে বিশ্বাসঘাতক খুনি জিয়া-মোশতাকের মাধ্যমে জারি করা এবং মেজর জিয়াউর রহমানের সময় বৈধতা পাওয়া ইনডেমনিটি অধ্যাদেশটি বিলুপ্ত বলে গণ্য হয়। আর এভাবেই ওই ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বিলুপ্ত করার মাধ্যমে শুরু করে বাঙালি জাতির কলঙ্ক মোচনের কাজ। স্বাধীনতাকামী বাঙালির আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে বাংলাদেশের অশুভ ছায়া যুদ্ধাপরাধী, মানবতাবিরোধী অপরাধী, চিহ্নিত রাজাকারদের বিচারের মাধ্যমে স্বাধীনতার পরবর্তী প্রজন্মকে অভিশাপমুক্ত করেন একমাত্র শেখ হাসিনা। ৩০ লক্ষ শহীদ আর ২ লক্ষেরও বেশি নারী মুক্তিযোদ্ধার সম্ভম বিনাশের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক বাংলাদেশকে তার সঠিক স্রোতধারায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রতিটি সময়ে মিনিটে-মিনিটে ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়েছে।
একটি কাঙ্খিত স্বপ্ন নিয়ে আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিলো। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পরাধিনতার শৃঙ্খল ভেঙে একটি স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়ে তা পুরণ হয়েছে। কিন্তু ১৯৭৫ সালে ধাক্কা ছিলো। ১৯৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ফিরে না আসলে ইতিহাসের স্বপ্ন ভঙ্গ হতো। আমার সৌভাগ্য হয়েছিল নেত্রীর স্বদেশে আসার সময় অন্যদের মতো আমিও একজন ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে স্বাগত জানিয়েছিলাম। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করেছিলাম, ‘আমরা সবাই মুজিব হব, মুজিব হত্যার বিচার করব, এক মুজিবের রক্ত থেকে লক্ষ মুজিব জন্ম নেবে’-ঝড় বৃষ্টি আঁধার রাতে আমরা আছি তোমার সাথে’।
১৯৮১ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা ফিরে না আসলে ৩০ লক্ষ শহীদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতো না। ইতিহাসের নৈবিত্ত সাজানো, সেটা হচ্ছে সুখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠন। সেটা বাস্তবায়ন হতো না। তাকে ঘিরে এগিয়ে যেতে হবে। সেদিন যে আশা নিয়ে নেত্রীকে স্বাগত জানিয়েছিলাম, সেদিনের সেই সব প্রত্যাশা এখন পুরণ হচ্ছে। মানুষ ভোট ও ভাতের অধিকার ফিরে পেয়েছে। ভূমিহীন ও গৃহহীনরা খুজে পেয়েছে আপন ঠিকানা। উন্নয়নের মহাসড়কে দেশ। শুধু কি তাই? রাজনীতিতেও এসেছে গুনগত পরিতর্বন। কারণ জাতির পিতার হত্যার পর সামরিক শাসকরা রাজনীতিকে কুলশিত করেছিলো। গণতন্ত্রকে করেছিল নির্বাসিত। বঙ্গবন্ধুকন্যা তাঁর দৃঢ় ও আপোষহীন নেতৃত্বে গণতন্ত্রকে শৃঙ্খল মুক্ত করেছেন। ফিরিয়ে এনেছেন ভোটের অধিকার। ছবিসহ ভোটার তালিকা, স্বচ্ছ ব্যালেট বাক্স তাঁরই দাবি ছিল। জেনারেল জিয়া ও খালেদা জিয়া ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন। ছাত্রদের বিপদে ঠেলে দিয়েছিলেন। অন্যদিকে জননেত্রী শেখ হাসিনা মতিঝিলের শাপলা চত্বরে ঐতিহাসিক ছাত্র মহাসমাবেশে ছাত্রলীগের কর্মীদের হাতে বই-খাতা-কলম তুলে দিয়ে বলেছিলেন, অস্ত্র নয়, বই, খাতা-কলম হচ্ছে ছাত্রলীগের হাতিয়ার। ঐতিহাসিক সেই মহাসমাবেশে উপমহাদেশের বৃহৎ ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের তখন আমি সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলাম (তখন আমি ছাত্রলীগের সভাপতি)।
পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো বাংলাদেশ ও বাঙালিদের কল্যাণ কামনা করেন। জনগনের মঙ্গল কামনায় সব সময় তিনি নিয়োজিত থাকেন। যার সর্বশেষ প্রমাণ মেলে ভারত সফরে আজমীর শরিফ দরগাহ’এ গিয়ে দেশের জনগণের জন্য দোয়া চেয়েছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন একজন রাজনীতিক, যিনি মহাকাশে স্যালেটাই পাঠান, আবার নিভৃত পল্লীতে একজন বিধবা মহিলা, স্বামী পরিত্যাক্ত, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ভাতা পেলেন কিনা? কোন ভূমিহীন ঘর পেলেন কিনা সেটারও খোঁজখবর রাখেন। তিনি ভবিষ্য প্রজন্মের জন্য কাজ করেন। সে কারণে শতবর্ষী ডেল্টাপ্ল্যান ২১০০ বাস্তবায়ন শুরু করেছেন।
আসুন শেখ হাসিনাকে আলোকবর্তিকা ধরে নিয়ে জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করি। ইতিহাসের নৈতিত্ত যে সাজানো বাংলাদেশ শেখ হাসিনার হাত ধরে। শেখ হাসিনাকে আলোক বর্তিকা ধরে নিয়ে অন্ধকার অনামিষাকে পাড়ি দেই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অপ্রতিরোধ যাত্রায় দুর্গম পথে তাকে ঘিরেই এগিয়ে যাবো এটাই হোক আজকের প্রত্যাশা।
শেখ হাসিনার পরবর্তী ইতিহাস একবিংশ শতকের অভিযাত্রায় তিনি কীভাবে বাঙালি জাতির কা-ারি হয়েছেন তারই ইতিহাস। বঙ্গবন্ধু যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখতেন সেই স্বপ্ন রূপায়নের দায়িত্ব নিয়ে বাঙালি জাতির আলোর দিশারী হওয়ার ইতিহাস। ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে তাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। আর ঐ বছরেরই ১৭ মে দীর্ঘ ৬ বছর প্রবাস জীবনের অবসান ঘটিয়ে মাতৃভূমি বাংলাদেশে ফিরে আসেন। তিনি ১৯৯০ সালের ঐতিহাসিক গণআন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়ে দীর্ঘ ২১ বছর পর সরকার গঠন করে এবং সে বছরের ২৩ জুন প্রথমবারের মতো তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাকে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড নিক্ষেপ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়। তিনি অলৌকিকভাবে বেঁচে গেলেও ওই হামলায় ২৪ জন নিহত এবং ৫শ' নেতা-কর্মী আহত হন।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আসন নিয়ে বিশাল বিজয় অর্জন করে। এই বিজয়ের মধ্যদিয়ে শেখ হাসিনা দ্বিতীয় বারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি তৃতীয়বার এবং ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।
শিল্প সংস্কৃতি ও সাহিত্য অন্তপ্রাণ শেখ হাসিনা লেখালেখিও করেন। তার লেখা এবং সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা ৩০টিরও বেশি। প্রকাশিত অন্যতম বইগুলো হচ্ছে- শেখ মুজিব আমার পিতা, সাদা কালো, ওরা টোকাই কেন, বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম, দারিদ্র্য দূরীকরণ, আমাদের ছোট রাসেল সোনা, আমার স্বপ্ন আমার সংগ্রাম, সামরিকতন্ত্র বনাম গণতন্ত্র, আর্ন্তজাতিক সর্ম্পক উন্নয়ন, বিপন্ন গণতন্ত্র, সহেনা মানবতার অবমাননা, আমরা জনগণের কথা বলতে এসেছি, সবুজ মাঠ পেরিয়ে ইত্যাদি।
শুভ জন্মদিন বঙ্গবন্ধুর বীরকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আল্লাহ আপনার দীর্ঘায়ু দান করুন-আমিন।
লেখক: উপমন্ত্রী, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়; সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, সাবেক সভাপতি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ও সাবেক ভিপি, জাকসু।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: