নাঈম-সাকিবের ব্যাটে স্বস্তি

নাঈম-সাকিবের ব্যাটে স্বস্তি

অবহেলার জবাব দিলেন নাঈম শেখ। স্কটল্যান্ড ম্যাচের আগে টানা ১৬ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন এই বাঁহাতি। অথচ তাকেই কিনা বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে রাখা হলো একাদশের বাইরে। এ নিয়ে সমালোচনা ও প্রশ্নবাণ শেষে কোচ রাসেল ডমিঙ্গো হলেন নাঈমের দ্বারস্থ। সৌম্য সরকারকে বসিয়ে তাকে ফেরানো হলো দলে। আর এই নাঈমের ব্যাটেই স্বস্তির সংগ্রহ গড়ে বাংলাদেশ। তার ৫০ বলে ৬৪ রানে বাংলাদেশ ওমানের বিপক্ষে বিশ্বকাপ প্রথম পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে ১৫৩ রানে অলআউট হয়। নাঈমের সঙ্গে ২৯ বলে ৪২ করা সাকিব আল হাসানের ৮০ রানের জুটি বাংলাদেশকে ভালো সংগ্রহ এনে দেয়।

আগের ম্যাচের শিক্ষায় ওমানের বিপক্ষে বেশ কিছু সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আনে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট। তার কিছু কাজে দেয়, কিছু হয় বিফল। দলে ফেরা নাঈম শেখ তুলে নেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি। ১৮ ও ২৬ বলে দুটি জীবন পাওয়ায় সুযোগটা কাজে লাগান নাঈম। ৪৩ বলে চার মেরে ফিফটি (৫৩) তোলেন। যদিও এরপর বেশিদূর এগোতে পারেননি। পরিবর্তিত সিদ্ধান্তের কারণেই মুশফিকুর রহিমকে নামতে হয় ব্যাটিং অর্ডারের ৮-এ। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে শেষবার এই পজিশনে নেমেছিলেন মুশফিক। এমনকি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহও নিজের পজিশন বদলে নেমেছেন সাতে। তবে ওপরে সুযোগ পাওয়া মাহেদী হাসান, নুরুল হাসান সোহান ও আফিফ হোসেন তিনজনই দলের প্রয়োজন মেটাতে ব্যর্থ।

বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুটা ছিল স্কটিশ ম্যাচের চেয়েও নড়বড়ে। বিলাল খান ও কালিমুল্লাহর শুরুর ওভারগুলো ছিল নিখুঁত। তাদের গতি খুব বেশি না হলেও লাইন-লেন্থ ছিল সঠিক। সেই সঙ্গে লিটন দাশ ও নাঈম শেখের টিকে থাকা কঠিন করে তোলে শুরুর হালকা মুভমেন্ট। নতুন উইকেটের ময়েশ্চার কাজে লাগিয়ে মুভমেন্ট বের করে নিচ্ছিলেন ওমানের দুই পেসার। তাতে লিটন দাশ তো একবার আউটই হয়ে গেলেন। আম্পায়ার আঙুল তুলে দিয়েছিলেন। রিভিউ নিয়ে সে যাত্রা বেঁচে যান লিটন। রিভিউতে দেখা যায় ব্যাটে বল লাগেনি। কিছু পরে আবার উড়িয়ে মারতে গিয়ে লংঅনে জীবন পান লিটন। এবার ৪ রানে। বিলালের বলে তার ক্যাচ ফেলেন কাশ্যপ। প্রায় দুটি জীবন পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেননি লিটন। ৭ বলে ৬ রান করে বিলাল খানের বলে এলবিডব্লিউ হন। তৃতীয় ওভারে ১১ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। টানা ব্যর্থ লিটন আবারও হতাশ করেই ফিরলেন। ওপরে উঠে মাত্র ৩ রানে পরপর ফিরলেন মাহেদী। ৫ ওভারের মধ্যে ২১ রানে ২ উইকেট হারিয়ে আরও বিপদে বাংলাদেশ। প্রথম পাওয়ার প্লেতে আসে মাত্র ২৯ রান। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ছিল ২৫।

মাহেদী ফেরার আগের ওভারে টানা দুই বলে কালিমুল্লাহকে চার ও ছক্কা মারেন নাঈম। এরপর ব্যাটে বলে না হলেও উইকেটে থিতু হয়ে উঠছিলেন। সঙ্গে সাকিব যোগ দিয়ে ভরসা ফেরাচ্ছিলেন ধীরে। ১০ ওভারে বাংলাদেশের রান আসে ২ উইকেটে ৬৩। আগের ম্যাচে ছিল ৫৯।

১১তম ওভারটিতে দুজনে নেন ১৭ রান। ১৪তম ওভারে সাকিবের রান আউট গতিতে বাধা পড়ল। আকিবের নিখুঁত নিশানায় ২৯ বলে ৪২ রানে থামে সাকিবের দারুণ ইনিংস।

দারুণ জুটিটা ভাঙ্গায় রানেও ভাটা পড়ে বাংলাদেশের। তবুও নাঈমের ব্যাটে চড়ে পরের তিন ওভারে আসে ২২ রান। এর মাঝেই ফেরেন নুরুল হাসান সোহান (৩) ও আফিফ হোসেন (১)। দুজনই ছক্কার চেষ্টায় লংঅফে আউট হন। পাওয়ার প্লে-তে ২৯ রান করা বাংলাদেশের বোর্ডে ৭-১৫ ওভারের মধ্যে ২ উইকেটে জমা পড়ে ৮৩ রান।

একপ্রান্ত টানতে থাকা নাঈম অবশেষে ক্লান্তিতেই ফিরলেন। আফিফ ফেরার দুই বল পর কালিমুল্লাহর অফস্টাম্পের বাইরের বল পুল করতে গিয়ে মিডউইকেটে ধরা পড়েন ৫০ বলে ৬৪ রান করে। তিন চার ও চারটি ছক্কা ছিল তার ব্যাটে। শেষ পর্যন্ত মাহমুদউল্লাহ ১০ বলে ১৭ করে দলকে টেনে নেন দেড়শোর ওপারে। শেষ ৫ ওভারে বাংলাদেশ তোলে ৪১ রান। আর শেষ ৮ ওভারে ৬৫।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top