07/08/2025 রবিউল দারবিশ: অনুবাদের দরবেশ; নৈ:শব্দের লেখক
সাঈদ মাহমুদ রিদওয়ান
৮ জুলাই ২০২৫ ০০:৩৭
বাংলা সাহিত্যপ্রেমীরা ধীরে ধীরে একটি নামের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন—রবিউল ইসলাম দারবিশ। যাঁর লেখনীতে উচ্চারণ মৃদু, কিন্তু গভীরতা বিপুল। তিনি চিৎকার করেন না, বক্তব্য চাপিয়ে দেন না; বরং পাঠকের হৃদয়স্পর্শে নির্ভর করে তাঁর শব্দেরা বেঁচে থাকে—তুলোর মতো নরম, তবু ছুরির মতো ধারালো।
= একজন নীরব লেখক, শব্দের পথিক =
রবিউল দারবিশ নিজেকে লেখক বলে দাবি করেন না, বরং শব্দের এক পথিক, অনুভবের এক দর্শনার্থী। তাঁর লেখায় মফস্বলের চুপচাপ দুপুর, পুরনো কবরস্থান ঘেরা গলি, মাদ্রাসার বারান্দা, কিংবা শহুরে একাকিত্ব—সব একসঙ্গে সঙ্গীতের মতো বাজে। তিনি লিখেন অন্তরের নৈঃশব্দ্যকে ভাষা দিয়ে, যেখানে বিষণ্ণতা শুধু দুঃখ নয়, একধরনের আলোকও বটে।
= অনুবাদের নির্মাতা: যখন আত্মা অনুবাদ হয় =
রবিউল দারবিশ বাংলা ভাষায় যাঁদের নিয়ে এসেছেন, তাঁদের নাম উচ্চারণ করলেই বোঝা যায় তিনি কেমন স্পর্শে কাজ করেন। তিনি অনুবাদ করেছেন—
উর্দুর বিদ্রোহী মরমি কবি জন এলিয়াকে
প্রেম ও বিপ্লবের সুরেলা কণ্ঠস্বর ফয়েজ আহমেদ ফয়েজকে
নারীর অভিজ্ঞানকে ভাষায় গাঁথা পারভিন শাকিরকে
এবং ধ্রুপদি গজলের জীবন্ত মূর্তি মীর তাকি মীরকে।
এইসব অনুবাদ কেবল বাক্যরূপান্তর নয়, বরং মূল কবির হৃদয়বর্ণকে বাংলায় পুনরুজ্জীবিত করা। তাঁর অনুবাদে থাকে ভাষার প্রতি মমতা, ভাবের প্রতি শ্রদ্ধা, আর পাঠকের প্রতি নিঃশর্ত দায়বদ্ধতা।
= তরুণ মন ও বিষণ্ণ আত্মার ভাষা =
রবিউলের রচনায় প্রতিফলিত হয় এই সময়ের তরুণদের অস্তিত্ব-সংকট, প্রেমহীনতা, আত্মদ্বন্দ্ব ও নৈঃশব্দ্যের আকাঙ্ক্ষা। তিনি ট্রেন্ড করেন না—তাঁর লেখা হঠাৎ করেই পাঠকের মনের গোপন দরজায় নক করে, আর খুললেই বোঝা যায়, এতদিন যা বুঝতে পারিনি, তা-ই কেউ যেন বলে দিয়েছে।
= শেষ কথা =
রবিউল দারবিশ লেখেন নীরবে, অনুবাদ করেন ভালোবেসে। তাঁর প্রতিটি শব্দ যেন আত্মার দরজা খোলে।