৩ দফা দাবিতে গণঅধিকার পরিষদের বিক্ষোভ

৩ দফা দাবিতে গণঅধিকার পরিষদের বিক্ষোভ

গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, এই সরকার ১২ বছরে ১২ বার বিদ্যুৎ, ১৪ বার পানি ও ৯ বার গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। আর এক পয়সাও কোন কিছুর দাম বাড়াতে দেওয়া হবে না। দাবি মানা না হলে পরবর্তীতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সারাদেশে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।

শুক্রবার বিকালে দ্রব্যমূল্যের দাম কমানোসহ তিন দফা দাবিতে শহীদ মিনারে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে গণঅধিকার পরিষদ। গণ অধিকার পরিষদের ৩ দফা হচ্ছে, ১/ তেল-গ্যাসের বর্ধিত দাম ও গণপরিবহনের বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার করতে হবে। ২/ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনতে হবে। ৩/ নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য স্বল্প মূল্যে মাসিক ভিত্তিতে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক অর্থনীতিবিদ ড.রেজা কিবরিয়া বলেন, দেশে একটা শ্রেণী আছে যাদের রাতে টেনশনে ঘুম হয় না। তারা হলো দূর্নীতিবাজরা, আরেকটা শ্রেণী হলো বিনা ভোটের এই অবৈধ সরকারের এমপি,মন্ত্রীরা। আমাদের সমাজে আলেম-ওলামাদের সম্মান করা হলেও এই জুলুমবাজ সরকার দুই হাজারেরও বেশি আলেম-ওলামাকে জেলে বন্দী করে রেখেছে। অন্যায়ভাবে অত্যাচার করেছে। আমাদেরও সাত জন এখনও জেলে রয়েছে,যাদের পরিবার খুবই কষ্টে দিন পার করছে। কিন্তু আমরা হতাশ নই। গণঅধিকার পরিষদের জন্ম হয়েছে এদেশের মানুষের মুক্তির জন্য।স্বাধীনতার ৫০ বছরেও দেশের মানুষ আসল স্বাধীনতা পায়নি। এ দেশের মানুষের কষ্ট দূর করার জন্য,মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিতে শীঘ্রই সকলকে সাথে নিয়ে জনগণের মুক্তির আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

এ সময় গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, 'দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার রাজনৈতিক সংঘাতকে গ্রাম-গঞ্জে ছড়িয়ে দিয়েছে। এই ইউপি নির্বাচনেও ৩২ জন নিহত হয়েছে। নির্বাচন এখন সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। এর জন্য হুদা কমিশনকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।সাবেক প্রধানবিচারপতি এসকে সিনহা দেশে থাকতে কেন বিচার করতে পারেননি? এখন নাটক করছেন? গণতন্ত্র হত্যায় বিচারপতি খাইরুল হককেও বিচারের মুখোমুখি করা হবে।

মোদি বিরোধী আন্দোলনে গ্রেফতার ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের নেতাদের চোখে মরিচ দিয়ে শাহবাগ থানায় এবং সাম্প্রতিক চট্টগ্রামে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে মিথ্যা স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছে দাবি করে, অনতিবিলম্বে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবি জানান নুরুলহক। নেতা-কর্মীদেরকে অন্যায়ভাবে হয়রানি না করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে নুর বলেন,' আমরা গণ মানুষের অধিকার আদায়ে যে সংগ্রাম করছি এ সংগ্রাম এদেশের ১৮ কোটি মানুষের।

দেশকে রাজনৈতিক সংঘাত-সহিংসতা থেকে বাঁচাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে অবাধ,সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে নুর বলেন, আজকে আমরা তেল-গ্যাসের বর্ধিত দাম ও গণপরিবহনের বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যে জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা এবং স্বল্পমূল্যে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালুর দাবিতে শহীদ মিনারে এই শান্তিপূর্ণ সমাবেশে সমবেত হয়েছি। এই সরকার ১২ বছরে ১২ বার বিদ্যুৎ, ১৪ বার পানি ও ৯ বার গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। আর এক পয়সাও কোন কিছুর দাম বাড়াতে দেওয়া হবে না। দাবি মানা না হলে পরবর্তীতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সারাদেশে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।

গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খাঁন বলেন, বিনা ভোটের এক ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকার আমাদের ঘাড়ে চেপে বসেছে। এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটাতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
গতকাল নারায়ণগঞ্জে র্যাব- পুলিশ যেভাবে ভোটডাকাতদের প্রতিহত করেছে, সারা বাংলাদেশে র্যাব পুলিশকে এভাবে ভূমিকা রাখতে হবে। শামীম ওসমান র্যাব কর্মকর্তার সাথে বাদানুবাদ করে ভোট ডাকাতের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। শামীম ওসমানের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আপনি বলেন খেলা হবে। আমরাও বলি খেলা হবে। প্রশাসন বাদে খেলতে আসুন, ১ মিনিটও রাস্তায় দাঁড়াতে পারবেন না।গতকাল দেখেন নি, জনগণ কিভাবে দৌড়ানি দিয়ে বাথরুম ঢুকিয়েছে?

গণঅধিকার পরিষদ এর যুগ্ম সদস্য সচিব আতাউল্লাহর সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান,এ্যাড.খাদেমুল ইসলাম,মাহফুজুর রহমান খান, আবু হানিফ, জসিম উদ্দিন আকাশ,ব্যারিস্টার জিসান মাহমুদ, সহকারি সদস্য সচিব, আব্দুজ জাহের,এ্যাড.শিরিন আক্তার,ফাতেমা তাসনিম,যুব পরিষদ যুগ্ম আহ্বায়ক তারেক রহমান,নাদিম হাসান, ছাত্র অধিকার পরিষদ এর সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব,শ্রমিক অধিকার পরিষদ এর কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুর রহমান,পেশাজীবী অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক শামসুল আলম প্রমুখ।

 




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top