স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব, ব্যবসায়ীকে বাসায় ডেকে শেষ করলেন স্বামী

স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব, ব্যবসায়ীকে বাসায় ডেকে শেষ করলেন স্বামী

স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ায় ব্যবসায়ী শাহীন মোল্লাকে বাসায় ডেকে নিয়ে হত্যা করেন ইউসুফ মোল্লা ও তার দুই সহযোগী। হত্যার পরে মরদেহ ঘরের মধ্যে বস্তা ভরে বিশেষ ব্যবস্থায় রেখে দেন। পরে ব্যবসায়ীর পরিবারের কাছে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করতে গিয়ে র‍্যাবের হাতে আটক হন অভিযুক্তরা। ব্যবসায়ী শাহীন মোল্লা নিখোঁজ হওয়ার ৯ দিন পরে রহস্যের জট উন্মোচিত হলো।

বরিশাল নগরীর ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাঁঠালতলা তালুকদার হাউজিংয়ের প্রথম গলির নাহার ভিলার ৪র্থ তলায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে র‍্যাব-৮ সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান র‍্যাব-৮ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহমুদুল হাসান।

তিনি জানান, তদন্তে এখন পর্যন্ত অন্য কোনো কারণে হত্যা করেছে এমন কিছু পাওয়া যায়নি। অভিযুক্তদের স্বীকারোক্তি অনুসারে স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ায় ডেকে নিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে এবং পিটিয়ে হত্যা করার তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, গত ২৭ জানুয়ারি বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাঁঠালতলা এলাকা থেকে নিখোঁজ হন মুদি ব্যবসায়ী শাহীন মোল্লা (৩৮)। এ ঘটনায় নিখোঁজ শাহীন মোল্লার আত্মীয় আব্দুল খালেক ৩০ জানুয়ারি কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। ৩১ জানুয়ারি শাহীন মোল্লার বোন শিরিন আক্তার মুন্নি র‍্যাব-৮ কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। এতে তারা যাদের সন্দেহভাজন বলে উল্লেখ করেন তাদের র‍্যাব জিজ্ঞাসাবাদ করে সম্পৃক্ততা না পেয়ে ছেড়ে দেয়। পরে ছায়া তদন্তে নামে র‍্যাব।

এদিকে ২ ফেব্রুয়ারি শিরিন আক্তারের স্বামীর কাছে মোবাইলে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। মোবাইল কলের সূত্র ধরে র‍্যাব অভিযান চালিয়ে মোবাইলের মালিককে বাকেরগঞ্জ থেকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তবে মোবাইলের মালিক তিনি হলেও সিমের মালিক ছিলেন অন্যজন। এরপরেই মূলত খুলতে শুরু করে নিখোঁজের রহস্যের জট।

র‍্যাব-৮ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহমুদুল হাসান জানান, তথ্য-প্রযুক্তির সাহায্যে আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করে শুক্রবার দিবাগত রাতে হত্যায় জড়িত ইউসুফ মোল্লা (২০), নাজমুল ইসলাম ওরফে অমি (১৯) এবং হামিম শিকদারকে (১৮) বরিশাল মহানগরীর এয়ারপোর্ট থানার কাশিপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত ইউসুফ মোল্লা বরগুনার আমতলী উপজেলার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের রুহুল আমিন মোল্লার ছেলে, নাজমুল ইসলাম অমি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার গণ্ডামারি এলাকার রকিবুল ইসলামের ছেলে এবং হামিম শিকদার বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার ৯ নং ওয়ার্ডের মিজান শিকদারের ছেলে। এরা সকলেই ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভাড়া থাকতো।

অভিযুক্ত ইউসুফ মোল্লা স্বীকার করেছেন- তার স্ত্রী স্বর্ণা বিশ্বাসকে (১৮) ব্যবসায়ী শাহীন মোল্লা বিভিন্ন সময়ে শারীরিক সর্ম্পক স্থাপনের জন্য প্রস্তাব দিতেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৭ জানুয়ারি রাত সোয়া ৯টার দিকে ইউসুফ মোল্লার ভাড়া বাসা রুপাতলী কাঠালতলা তালুকদার হাউজিং প্রথম গলির নাহার ভিলার ৪র্থ তলায় ডেকে নিয়ে প্রথমে শ্বাসরোধ করে বেদম পিটুনি দিয়ে শাহীন মোল্লাকে হত্যা করা হয়। তার মরদেহ বস্তাবন্দি করে বাথরুমের ফলস ছাদের ওপরে রেখে দরজা আঠা দিয়ে বন্ধ করে দেন ইউসুফ মোল্লা। এর পরদিন তারা বাসা ছেড়ে দেন।

লে. কর্নেল মাহমুদুল হাসান বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের মামলার অনুকূলে কোতোয়ালি মডেল থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top